গত ৩ এপ্রিল বৃহস্পতিবার নিউ ইয়র্ক সিটি মেয়র এরিক এডামসের সরকারী বাসভবন গ্রেসী ম্যানসনে উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপিত হয়েছে ২য় ‘বাংলাদেশ হেরিটেজ ডে’। আয়োজনে সহযোগী সংগঠন ছিল নিউ ইয়র্কের বাংলাদেশ সোসাইটি।
বাংলাদেশি কমিউনিটির দুই শতাধিক ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে ইস্ট রিভারের পাড়ে মেয়রের সরকারি বাসভবন ‘গ্রেসি ম্যানসন’ এ বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আয়োজনে প্রবাসী বাংলাদেশি শিল্পী রানু নেওয়াজ ও অনিক রাজ সংগীত পরিবেশন করেন। বাংলাদেশীদের মুখরিত কলতানে যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম নগরীর মেয়রের সরকারী বাসভবনটি পরিনত হয়েছিল একখন্ড বাংলাদেশে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সোসাইটির প্রেসিডেন্ট আতাউর রহমান সেলিম, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলীসহ সাইটেশন প্রাপ্ত এম এম শাহীন, নুরুল আজিম, জয়া করিম ও নুসরাত বাজলি । নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল মোঃ নাজমুল হুদা তার বক্তব্যে মেয়রকে ২য় ‘বাংলাদেশ হেরিটেজ ডে’ আয়োজনের জন্য বিশেষ ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। বাংলাদেশ সোসাইটির প্রেসিডেন্ট আতাউর রহমান সেলিম, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী গ্রেসী ম্যানশনে ‘বাংলাদেশ হেরিটেজ ডে’ আয়োজনের সুযোগ দেওয়ার জন্য মেয়র ও তাঁর সহযোগীদের ধন্যবাদ জানান।
এরপর মেয়র অফিসের শীর্ষ প্রশাসনিক কর্মকর্তা বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত মীর বাশার তাঁর সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে ‘বাংলাদেশ হেরিটেজ ডে’ আয়োজনে সহযোগিতার জন্য নিউ ইয়র্ক বাংলাদেশ সোসাইটি এবং নুরুল আজিমকে ধন্যবাদ জানিয়ে মঞ্চে আহবান করেন মেয়র অ্যাডামসকে।
সমবেত বাংলাদেশীদের উদ্দ্যেশে মেয়র এরিক এডামস তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশি আমেরিকানদের ভূয়শীপ্রসংশা করেন। মেয়র বলেন, নিজেদের কৃষ্টি বা হেরিটেজ না ভুলে গিয়েও প্রকৃত আমেরিকান হওয়া যায়, নিউ ইয়র্ক সিটি তার প্রমাণ। তিনি আরো বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশিরা নিউ ইয়র্ক সিটিতে সবচেয়ে বৃহৎ মুসলিম কমিউনিটি। এক সময় আমেরিকার ড্রিম পুরণের জন্য বাংলাদেশিরা নিউ ইয়র্কসহ আমেরিকায় আসতেন। বর্তমানে তাদের কর্মকান্ডের মাধ্যমে তারা নিউ ইয়র্কসহ আমেরিকাবাসীদের স্বপ্নপুরণে গুরুত্বপুর্ণ অবদান রাখছেন। নিউ ইয়র্ক সিটির বাসিন্দাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে বাংলাদেশী পুলিশ অফিসারদের ভুয়সী প্রশংসা করেন মেয়র এডামস।
তিনি আরো বলেন,বাংলাদেশীদের রেজিস্ট্রেশন করে ভোটার হয়ে, ভোটাধিকার প্রয়োগ করে নিজেদের শক্তি আরো বৃদ্ধি করতে হবে। তবেই প্রশাসন সব সময় আপনাদের পাশে থাকবে। মেঢর এডামস বলেন, আমি আগেও ছিলাম ভবিষ্যতেও আপনাদের পাশে থাকব। এ সময় তিনি উল্লেখ করেন হয়তো একদিন বাঙালিদের মধ্যে কেউ একজন নিউ ইয়র্ক সিটি মেয়র হয়ে আসবেন।
এবারের ‘বাংলাদেশ হেরিটেজ ডে’ আয়োজনের অন্য একটি আলোচিত দিক ছিল মেয়র এরিক এডামস কর্তৃক কয়েকজন বাংলাদেশী আমেরিকানকে ‘সাইটেশান’ প্রদান। এঁরা হলেন বাংলাদেশের সাবেক এমপি ও সাপ্তাহিক ঠিকানার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ও বর্তমানে সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি এমএম শাহীন, রিয়েল এষ্টেট ইনভেষ্টর নুরুল আজিম, নুসরাত বাজলি ও জয়া করিম । মেয়র অফিস সুত্রে জানা গেছে, সাইটেশন এর জন্য ৫ জনের নাম প্রস্তাব করে বাংলাদেশ সোসাইটি যার মধ্যে দুইজন ু নুরুল আজিম ও নুসরাত বাজলিকে সাইটেশন প্রদান করা হয়। সাইটেশনের জন্য এম এম শাহীনের নাম প্রস্তাব করে মেয়র অফিসের এথনিক মিডিয়া ডিপার্টমেন্ট ও অটিজম এক্টিভিষ্ট জয়া করিমের নাম প্রস্তাব করে মেয়র অফিসের ইন্টারন্যাশনাল এফেয়ার্স ডিপার্টমেন্ট।
এবারের ‘বাংলাদেশ হেরিটেজ ডে’ অনুষ্ঠানে শুরু কিংবা শেষ কখনোই যুক্তরাষ্ট্র কিংবা বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত বাজানাো হয়নি। অনুষ্ঠানে খাবার পরিবেশন করে ম্যনহাটানের ওহ ক্যালকাটা রেষ্টুরেন্ট ও জ্যাকসন হাইটসের নবান্ন রেষ্টুরেন্ট। সকল ছবি পরিচয় এর নিজস্ব।