যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে অবৈধ ইমিগ্রান্টদের ডিপোর্টেশনের যে অভিযান চলছে, দেশটির সবচেয়ে বড় ও সর্বাধিক জনঅধ্যুষিত নিউ ইয়র্ক সিটিতে তা ব্যাপকভাবে অনুভূত হচ্ছে। বাংলাদেশী সহ সকল দেশের অবৈধ ইমিগ্রান্টদের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। ইউএস ইমিগ্রেশন বিভাগের তথ্য মতে নিউ ইয়র্কে আড়াই লাখের বেশি ইমিগ্রান্টের বিরুদ্ধে ডিপোর্টেশন অর্ডার রয়েছে। এ সংখ্যা ২ লাখ ৫৪ হাজার ১৮০ জন। এদিকে চুড়ান্ত ডিপোর্টেশন আদেশ প্রাপ্তরা আইসের প্রাথমিক টার্গেট হলেও অভিযান চলাকালে যুক্তরাষ্ট্রে যোকান ধরনের ইমিগ্রেশন আইন ভঙ্গকারী কিংবা অভিবাসন প্রত্যাশীরা ইমিগ্রেশন এন্ড কাষ্টমস এনফোর্সমেন্ট এজেন্টদের অভিযানে জিজ্ঞাসাবাদের সম্মুখিন হতে পারেন।
এ সময় গ্রেপ্তার হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই তাঁর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্র জুড়েই জোরেশোরে চলছে অবৈধ অভিবাসীদের গণ-ডিপোর্টেশন কার্যক্রম। ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যাণ্ড সিকিউরিটির তত্ত্বাবধানে আইস’র নেতৃত্বে এফবিআই, এটিএফ, ডিইএ এর ২৫টি ফিল্ড অফিসের মাধ্যমে চলছে এই কার্যক্রম। আইস’র অভিযানে নিউ ইয়র্কে প্রথম আটকের শিকার হন সাব্বির আহমদ নামের এক বাংলাদেশী যুবক। গত ২৮ জানুয়ারী তাকে জ্যাকসন হাইটসের একটি বাসা থেকে ভোর ৬টার দিকে গ্রেফতার করে পেনসেলভিনিয়ায় আইসের ডিটেনশন সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়। ঐ যুবকের বাড়ি সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলায়। ২০২২ সালের ২১ জানুয়ারী সে ব্রাজিল হয়ে মেক্সিকো-টেক্সাস সীমান্ত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছিলেন সাব্বির। সে তার বড় ভাইয়ের সাথে বসবাস করছিলেন। অপরদিকে সর্বশেষ গত ২ ফেব্রুয়ারি রোববার ভোরে মোহাম্মদ শামীম (৪০) নামে আরেক বাংলাদেশীকে পেনসিলভেনিয়ার রুজভেল্ট এলাকা থেকে আইস গ্রেফতার করে আইস। বাংলাদেশ সোসাইটির সহযোগিতার আশ্বাস এদিকে ট্রাম্প প্রশাসনের গণ-ডিপোর্টেশন কর্মসূচিতে কোন প্রবাসী বাংলাদেশী সমস্যার মুখোমুখী হলে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশীদের ‘আমব্রেলা সংগঠন’ হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ সোসাইটির পক্ষ থেকে সভাপতি মোহাম্মদ আতাউর রহমান সেলিম সোসাইটির পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন এবং যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশী ও আমেরিকান আইনজ্ঞ নিয়ে সেমিনার আয়োজন করে সংশ্লিস্টদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদানের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে বলে বার্তা সংস্থা ইউএনএ প্রতিনিধিকে জানান।
নিউ ইয়র্ক সেমিনার গ্রুপ-এর মতবিনিময় সভা অপরদিকে ট্রাম্প প্রশাসনের গণ-ডিপোর্টেশন কর্মসূচিতে আতংকিত না হয়ে সতর্কতার সাথে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার উপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। নির্দিষ্ট ডকুমেন্টসহ বৈধ প্রবেশকারীদের চিন্তার কোনো কারণ নেই বলে মন্তব্য করেছেন সংশ্লিস্টরা। গত ১ ফেব্রুয়ারি শনিবার, জ্যাকসন হাইটসের একটি মিলনায়তনে অয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। সভায় বিব্রতকর পরিস্থিতি এড়াতে সবাইকে প্রয়োজনীয় ডুকমেন্ট সাথে রাখার পরামর্শ দেন এটর্নীসহ বক্তারা। নিউ ইয়র্ক সেমিনার গ্রুপ আয়োজিত এই সভায় এটর্নী মঈন চৌধুরী, এডভোকেট এন মজুমদার, জাকির চৌধুরী সিপিএ সহ আরো অনেকেই বক্তব্য রাখেন এবং প্রবাসী বাংলাদেশীদের যেকোন সমস্যায় পাশে থেকে সহযোগিতারর আশ্বাস দেন। এসময় অন্যান্যের মধ্যে লোন অফিসার ফাহিম হোসেন, রিয়েলটর ইমাম হাসান, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিষ্ট ফাহাদ সোলায়মান উপস্থিত ছিলেন। নিউ ইয়র্ক (ইউএনএ)