‘রাইজ আপ নিউ ইয়র্ক সিটির ব্যানারে ৭ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার জ্যাকসন হাইটসের গুলশান টেরেস মিলনায়তনে নিউ ইয়র্ক সিটি নির্বাচনে প্রার্থীদের এজেন্ডা নিয়ে খোলামেলা আলোচনার মধ্য দিয়ে প্রবাসী বাংলাদেশীদেরকে পছন্দের প্রার্থী বাছাইয়ের পথ সুগমের সমাবেশ হয়েছে। এটি ছিল এ ধরনের দ্বিতীয় সম্মেলন। মূলধারায় জোরালো সম্পর্কের মধ্য দিয়ে নিজেদের অধিকার ও মর্যাদা আদায়ে এ ধরনের সমাবেশের গুরুত্ব অপরিসীম বলে সিটি মেয়র, সিটি কম্পট্রোলার, পাবলিক এডভোকেট ও কাউন্সিলম্যান প্রার্থীরা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন।
সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্ট মো. শামসুল হকের উপস্থাপনায় মার্কিন রাজনীতিতে প্রবাসীদের অন্যতম পথিকৃত গিয়াস আহমেদ বলেন, ‘২০ বছর আগে আমি নিউ ইয়র্ক স্টেট সিনেটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছি। তাই, আমি জানি মূলধারার রাজনীতিতে সম্পৃক্ততা কতটা জরুরী। তিনি বলেন, ২০ বছর আগে কোথাও কোন প্রবাসী ছিলেন না। এমনকি কমিউনিটি বোর্ডেও দেখিনি।
সিটি কাউন্সিল ডিস্ট্রিক্ট-২৫ থেকে রিপাবলিকান পার্টির নমিনেশনের লড়াইয়ে অবতীর্ণ শাহ শহীদুল হক সাঈদ বলেছেন, ‘আমরা অন্য কমিউনিটি ও ভাষার মানুষের জন্যে নির্বাচনী তহবিল গঠন করি।
‘প্রবাস-বন্ধু’ ও ডেমক্র্যাটিক পার্টির ডিস্ট্রিক্ট লিডার এটর্নী মঈন চৌধুরী বলেন, ‘আমরা যদি আলোচনার টেবিলে বসতে না পারি তাহলে কেউই আমাদের সমস্যা নিয়ে সরব হবেন না। আমি ২০১৬ সাল থেকে ডিস্ট্রিক্ট লিডারশিপে আছি, আমি সব সময় চেষ্টা করি কমিউনিটির গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুসমূহ রাজনীতি ও প্রশাসনের সামনে উপস্থাপনের জন্য।
কমিউনিটি বোর্ড মেম্বার শাহনেওয়াজ বলেন এই সিটির স্বল্প ও মাঝারি আয়ের কর্মচারিদের নিদারুন কষ্টের কথা। ‘বাসা ভাড়াসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সাথে সঙ্গতি রেখে বেতন-ভাতা বাড়ানো হচ্ছে না। একই অবস্থা অন্য পেশার লোকজনেরও।
বাংলাদেশী আমেরিকান এডভোকেসি গ্রুপের প্রেসিডেন্ট জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘ভোটার হিসেবে তালিকাভুক্ত হতে হবে এবং কেন্দ্রে যেতে হবে। তাহলেই কমিউনিটির গুরুত্ব বাড়বে এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রের ন্যায্য হিস্যা নিয়ে আন্দোলন-সংগ্রাম করতে হবে না।’ সিটি মেয়র পদে ডেমক্র্যাটিক পার্টির মনোনয়নের দৌড়ে অবতীর্ণ একমাত্র মুসলিম প্রার্থী যোহরান মামদানি বলেন, এই সিটির ৫ বরোর অভিবাসীদের একই স্বপ্ন। কিন্তু এখনকার পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গেছে যে, সেই স্বপ্নগুলোর কথা স্মরণ করতেও কষ্ট হচ্ছে। কীভাবে এই সিটিতে নিরাপদে বসবাসের উপযোগী একটি পরিবেশ তৈরী করা যাবে-সেটিও অসম্ভব হয়ে পড়ে।
প্রধান শামসুল হক স্বাগত বক্তব্যে তথ্য-উপাত্তের আলোকে উল্লেখ করেন, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা প্রাপ্তির পর আগমণের হার ক্রমান্বয়ে বাড়তে বাড়তে এখোন বিশেষ একটি পরিচিতি অর্জনে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশীরা। তবে সংখ্যার অনুপাতে মার্কিন রাজনীতি ও প্রশাসনে যেভাবে ঠাঁই পাওয়া উচিত ছিল তা এখনো দৃশ্যমান হয়নি। সেই সংকট কাটিয়ে উঠার অভিপ্রায়ে ‘রাইজ আপ নিউ ইয়র্ক সিটি’ কাজ করছে। আজকের এ আয়োজনে অনেক ভাল লাগছে। নিউ ইয়র্ক সিটির বিভিন্ন পর্যায়ের প্রার্থীর সমাগম ঘটায় আশা করছি কম্যুনিটি আরো উজ্জীবিত হবে।
এতে প্রার্থীগণের মধ্যে আরো ছিলেন হায়রাম মনসেরাত, জেনিফার রাজকুমার, ইসমাইল মালাভি, মাইকেল ব্ল্যাক, জাস্টিন ব্র্যানন, মার্ক লেভিন, জুমানি উইলিয়ামস, স্টেট সিনেটর জন ল্যু প্রমুখ।
কমিউনিটির বিশিষ্টজনদের মধ্যে ছিলেন বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি আতাউর রহমান সেলিম, প্রচার সম্পাদক অনিক রাজ, জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি বদরুন নাহার মিতা, হোমকেয়ার ব্যবসায়ী আকাশ রহমান, খোরশেদ খন্দকার, অজিৎ ভৌমিক, এনওয়াইপিডির কর্মকর্তা জামিল সরোয়ার জনি, ডিটেকটিভ মাসুদ প্রমুখ।