নিউ ইয়র্ক প্রতিবেদক: বাংলাদেশি-আমেরিকান আর্টিস্ট ফোরামের উদ্যোগে নিউ ইয়র্কে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল তিনদিনের জমকালো ও রঙিন আর্ট ক্যাম্প। ১১তম এই আসরের মূল প্রতিপাদ্য ছিল “মেলোডি অব ইন্ডিপেনডেন্স”। আমেরিকার স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে এবারের আর্টক্যাম্পে শিল্পীরা যে ছবি এঁকেছে তাতে করে উঠে এসেছে বৈচিত্র্যময় বিষয়। আমেরিকার সমৃদ্ধি কামনা, বিশ্বব্যাপী শান্তির প্রত্যাশা, প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের সুখময় এক একটি ছবি দর্শকদের আকৃষ্ট করে। কখনো প্রতিবাদ, স্বাধীনতার আকাঙ্খা ও ব্যক্তিমানুষের সুখ-দু:খ এসব বিষয়ও হয়ে ওঠে শিল্পীদের বিষয়। সবমিলিয়ে একটি অনবদ্য উৎসবে পরিণত হয় এই আর্ট ক্যাম্প।
অলাভজনক সংগঠন “ওয়ান ওয়ান অর্গানাইজেশন” এবারের আর্টক্যাম্পে সার্বিক সহায়তা দিয়েছে। লং আইল্যান্ডের এলিগেন্স ট্যারেসে এবারের আর্ট ক্যাম্প শুরু হয় গত ৪ জুলাই, শুক্রবার সন্ধ্যায়। ফিতা কেটে আর্ট গ্যালারির উদ্বোধন করা হয়। দুই দেশের জাতীয় সঙ্গীত, রবীন্দ্রনাথের গান, বাংলাদেশের হৃদয়ের গান, ঢাক-ঢোলের শব্দে শুরু হয় উৎসব। স্বাগত জানিয়ে বক্তব্য রাখেন ওয়ান ওয়ান অর্গানাইজেশনের চেয়ারম্যান মো. হাসান। এরপর উৎসবের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশি আমেরিকান আর্টিস্ট ফোরামের সভাপতি আর্থার আজাদ।
বক্তব্য রাখেন একুশে পদক বিজয়ী বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী ও শিক্ষক অধ্যাপক রোকেয়া সুলতানা, আর্টিস্ট ফোরামের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ চৌধুরী এবং এলিগেন্স ট্যারেস এর এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর শামীম আল আমিনসহ অন্যরা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন শেখ তানভীর আহমেদ।
এবারের উৎসবে নিউ ইয়র্কসহ যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য স্টেট থেকে শিল্পীরা যোগ দেন। একই সঙ্গে কানাডা এবং বাংলাদেশ থেকেও কয়েকজন স্বনামধন্য শিল্পী এসেছিলেন। এবারের উৎসবে কিউরেটর ছিলেন শিল্পী কায়সার কামাল।
আর্ট ক্যাম্পের প্রথম দিনে বিশালাকৃতির একটি ক্যানভাসে ৩৭ জন শিল্পী মিলে আমেরিকা এবং বাংলাদেশের মৈত্রী বন্ধকে থিম ধরে একটি ছবি আঁকেন। আমেরিকার ২৪৯তম স্বাধীনতা দিবসে বক্তাদের বক্তব্যে উঠে আসে মানবিক আমেরিকার শ্রেষ্ঠত্বের নানাদিক। একই সঙ্গে প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের শিল্প সংস্কৃতি বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরার প্রেরণার কথা বলেন তারা।
উৎসবের দ্বিতীয় দিনে শিল্পীরা ছঁবি আকেন। সঙ্গে ছিল সাংস্কৃতিক নানা আয়োজন। সঙ্গীত পরিবেশন করেন ড. জীবন বিশ্বাস, ওয়াহিদ আজাদ, মুক্তা ধর সহ অনেকে। যন্ত্রসঙ্গীত ও পরিচালনায় ছিলেন সীতেশ ধর। আবৃত্তি করেন শুক্লা রায়। বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট সাংবাদিক খালেদ মুহীউদ্দিন ও কৌশিক আহমেদ। অধ্যাপক রোকেয়া সুলতানা এদিন ওয়ার্কশন পরিচালনা করেন।
এবারের আর্টক্যাম্পের সবচেয়ে বড় অর্জন উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিশু কিশোরের অংশগ্রহণ। তৃতীয় দিনে শতাধিক শিশু-কিশোর আর্ট ওয়ার্কশপ এবং প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। সঙ্গে ছিলেন তাদের অভিভাবকরা।

নিউ ইয়র্কে আয়োজিত হলো তিনদিনের জমকালো আর্ট ক্যাম্প
Leave a comment